তাক্বদীর সম্পর্কে সালাফে ছালেহীনের কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ বাণী

* আলী (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) থেকে বর্ণিত, একদিন তাঁর সামনে তাক্বদীরের কথা বলা হলে তিনি তাঁর তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুলদ্বয় তাঁর মুখের মধ্যে প্রবেশ করালেন। অতঃপর ঐ আঙ্গুলদ্বয় দ্বারা হাতের তালুতে দু’টি দাগ দিলেন এবং বললেন,

«أَشْهَدُ أَنَّ هَاتَيْنِ الرَّقْمَتَيْنِ كَانَتَا فِي أُمِّ الْكِتَابِ»

‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এই দাগ দু’টিও আল্লাহ্‌র তাক্বদীরের মূল কিতাব তথা লাওহে মাহফূযে লেখা ছিল’।[1]

* আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) বলেন,

«لاَ واَللهِ لاَ يَطْعَمُ رَجُلٌ طَعْمَ الْاِيْمَانِ حَتَّى يُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ»

‘আল্লাহ্‌র কসম! তাক্বদীরের প্রতি ঈমান না আনা পর্যন্ত কেউ ঈমানের স্বাদ পাবে না’।[2]

* আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) বলেন,

«الْعَجْزُ وَالْكَيْسُ مِنَ الْقَدَرِ»

‘অপারগতা এবং বিচক্ষণতা তাক্বদীরেরই অংশ’।[3]

* ত্বাঊস (রহেমাহুল্লাহ) বলেন, আমি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর তিনশ’ ছাহাবীকে পেয়েছি, তাঁরা সকলেই বলেন,

 «كُلُّ شَيْءٍ بِقَدَرٍ»

‘সবকিছু তাক্বদীর অনুযায়ীই হয়’।[4]

* ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) বলেন,

«مَا غَلاَ أَحَدٌ فِي الْقَدَرِ إِلاَّ خَرَجَ مِنَ الإِسْلَامِ»

‘তাক্বদীর নিয়ে যে-ই বাড়াবাড়ি করেছে, সে-ই ইসলাম থেকে বের হয়ে গেছে’।[5]

* তিনি আরো বলেন,

«لَيْسَ قَوْمٌ أَبْغَضَ إَلَى اللهِ مِنَ الْقَدَرِيَّةِ»

‘আল্লাহ্‌র নিকট ক্বাদারিইয়াদের চেয়ে ঘৃণিত আর কোন সম্প্রদায় নেই’।[6]

* একদা ইবনে ওমর (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) কে বলা হয়েছিল, একদল লোক বলে যে, তাক্বদীর বলতে কিছু নেই। তখন তিনি বলেছিলেন,

«أُولَئِكَ الْقَدَرِيُّونَ. أُولَئِكَ مَجُوسُ هَذِهِ الْأُمَّةِ»

ওরাই হল ক্বাদারিইয়াহ সম্প্রদায়, ওরাই এই উম্মতের মাজূসী বা অগ্নিউপাসক’।[7]

* হাসান বাছরী (রহেমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তাক্বদীরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে, সে কাফের হয়ে যাবে’।[8]

* ইমামু আহলিস্‌ সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ ইমাম আহমাদ (রহেমাহুল্লাহ) বলেন, ‘ক্বাদারিইয়াহ, মু‘তাযিলাহ এবং জাহ্‌মিইয়াদের পেছনে ছালাত আদায় করা যাবে না’।[9]

[1]. আব্দুল্লাহ ইবনে আহমাদ, আস-সুন্নাহ, ২/৪৩২, আছার/৯৫৫, তাহক্বীক্ব: মুহাম্মাদ সাঈদ ক্বাহত্বানী, (দাম্মাম: দারু ইবনিল ক্বাইয়িম, প্রথম প্রকাশ: ১৪০৬ হি:); আজুর্‌রী, আশ-শারী‘আহ, ২/৮৪৪, আছার/৪২১; ইমাম লালকাঈ, শারহু উছূলিল ই‘তিক্বাদ, ৪/৭৩৭-৭৩৮, নং ১২১৩)। বর্ণনাটি যঈফ।

[2]. শারহু উছূলিল ই‘তিক্বাদ, ৪/৭৩৯, আছার/১২১৮; আব্দুর রাযযাক্ব, আল-মুছান্নাফ, ১১/১১৮, আছার/২০০৮১, তাহক্বীক্ব: হাবীবুর রহমান আ‘যমী, (বৈরূত: আল-মাকতাবুল ইসলামী, দ্বিতীয় প্রকাশ: ১৯৮৩ ইং)।

[3]. বুখারী, খালক্বু আফ‘আলিল ইবাদ/২৫; শারহু উছূলিল ই‘তিক্বাদ, ৩/৬০৭-৬০৮, আছার/৯৭০।

[4]. শারহু উছূলিল ই‘তিক্বাদ, ৪/৬৪০, আছার/১০২৭।

[5]. প্রাগুক্ত, ৪/৬৯৯, আছার/১১৩১।

[6]. আস-সুন্নাহ, ২/৪১৭, আছার/৯১২।

[7]. প্রাগুক্ত, ২/৪৩৩, আছার/৯৫৮।

[8]. হাফেয যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন্নুবালা, তাহক্বীক্ব: শু‘আইব আরনাঊত্ব এবং অন্যান্য, (বৈরূত: মুওয়াস্‌সাসাতুর রিসালাহ, নবম প্রকাশ: ১৯৯৩ ইং), ৪/৫৮১।

[9]. আব্দুল্লাহ ইবনে আহমাদ, আস-সুন্নাহ, ২/৮০৮, আছার/১৩৫৪।